ইব্রাহিম খলিল শিমুল, সুবর্ণচর, নোয়াখালী।
“কৃষক উপকৃত হলে দেশ উপকৃত হবে” এই শ্লোগানে নোয়াখালী সুবর্ণচরে পরিক্ষামূলক ভাবে বারি মাল্ট-১ জাত চাষ করে সাফল্যের স্বপ্ন দেখছেন মোঃ আফসার উদ্দিন।
আজ শনিবার (২২ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়। শিক্ষিত উদ্যোক্তা সে চরজব্বার ইউনিয়নের জাহাজ মারা বল্কের মোঃ জয়নাল আবেদিনের ছেলে।
স্থানিয়রা জানান, পরিক্ষামূলক ভাবে তিনি লাভের আশায় ঝুঁকি নিয়ে অর্থ ও শ্রম বিনিয়ােগ করে মাল্ট চাষে চমক লাগিয়েছে।বর্তমানে তাঁর বাগান পরিচর্যার জন্য ৪-৫ জন লোক কাজ করেন। তাঁর দেখাদেখি এলাকার অনেক বেকার যুবক মাল্টাবাগান করে বেকারত্ব দূর করার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করছে। আবার অনেকে চাষও করেছে।
কৃষক মোঃ আফসার উদ্দিন জানান, কৃষি অফিসের পরামর্শে পরিক্ষামূলক ভাবে ৮০ শতাংশ জমিতে মাল্ট চাষ করেছি। এই চারা গুলো রাজশাহী জেলা গিয়ে সরাসরি নার্সারি থেকে সংগ্রহ করি। এবং প্রতিটি চারা ৪৫০ টাকা করে ৫০০ টি চারা ক্রয় করেছি। চারা গুলো রোপণের পর থেকে ১৭-১৮ মাস বয়স হয়েছে। রোপণের পর থেকে এই পর্যন্তু প্রায় ৫ লক্ষ টাকার খরচ হয়েছে। আনুমানিক আরো ২ লক্ষ টাকার মতো খরচ হবে।
তিনি আরো বলেন, সবে মাত্র মাল্ট ধরা শুরু হয়েছে। এভাবে ১৫-২০ বছর পর্যন্তু ফল দিতে থাকবে। তবে খরচের তুলনায় আশাকরছি ব্যাপক লাভবান হবো। এবং আমার এই মাল্ট চাষ অনেকে দেখতে এসে পরামর্শ নিয়ে যাচ্ছে। এবং এই মাল্ট চাষে অনেক শিক্ষিত বেকাররাও ঝুঁকছে।
উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মনিরুল ইসলাম জানান, উপজেলার ১নং চরজব্বার ইউনিয়ের জাহাজ মারা বল্কে কৃষক মোঃ আফসার উদ্দিনকে মাল্ট চাষের জন্য পরামর্শ দিয়ে আসছি। প্রথম থেকে বারি মাল্ট-১ জাত নির্বাচন করি। তার মাল্টা গাছে বর্তমানে ফুল ও ফল দু’টিই রয়েছে। আমরা সুষম সার ব্যবহার আগাছা দমন’সহ বিভিন্ন প্রযুক্তি বিষয়ে তাদেরকে প্রতিনিয়ত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
সুবর্ণচর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ হারুন অর রশিদ জানান, সমগ্র উপজেলায় ৫ একর জায়গায় পরিক্ষামূলক ভাবে মাল্টার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে কৃষক মোঃ আফসার উদ্দিন অন্যতম একজন। তার নিজস্ব মালিকায় ৮০ শতক জায়গায় এই মাল্টা চাষের আবাদ করে। সে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শে গত ১৮ মাস পূর্বে বারি মাল্টা-১ জাতের ৫০০ টি চারা রোপণ করে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গাছে ব্যাপক ফল’সহ ফুলও রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, গাছের ডাল দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তিনি চাইলে প্রতি বছর ফল ছাড়াও শুধু মাত্র মাল্টার কলম বিক্রি করে বেশ টাকা উপার্জন করতে পারবে। এবং গাছে ফল-ফুল একসাথে ঝুলছে। এই চাষে সে ব্যাপক লাভবানের স্বপ্ন দেখছে। কৃষি অফিস থেকে তাদেরকে বিভিন্ন সহযোগীতা’সহ সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হচ্ছে। তবে এক সময় এই সুবর্ণচরের মাল্টা নোয়াখালী জেলা’সহ দেশেরে বিভিন্ন জেলার বড় বড় শহরে বিক্রি হবে।
Leave a Reply